জয়নুল আবেদিন রাহনুমা একজন কবি, দার্শনিক ও সাধক। ইরানের নেতৃস্থানীয় জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। একজন প্রভাবশালী সুন্নী মুসলিম। শিয়া সমাজেও তিনি পণ্ডিত হিসেবে দেশ ও সমাজের প্রশংসনীয় সেবাদান করেন।
তিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য উভয় সংস্কৃতির সাথেই সুপরিচিত ছিলেন। দীর্ঘ চল্লিশ বছরের চেয়েও বেশি সময় ধরে তিনি একজন সক্রিয় সাংবাদিক ও প্রকাশক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯১৬ সালে The Daily Iran প্রকাশের পর থেকেই তিনি এর সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯২১ সালে তিনি এই পত্রিকার মালিক হন।
এরপর তাঁর একটি প্রধান কাজ হয় স্বাধীন দৈনিক হিসেবে এর প্রকাশনা চালিয়ে নেয়ার জন্য সরকারের সাথে এর অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা। তাঁর স্পষ্টবাদী আচরণের জন্য ১৯৩৫ সালে তাঁকে ইরান ছাড়তে হয় এবং পত্রিকার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব অন্যের হাতে অর্পন করে যেতে হয়।
কিন্তু ১৯৪১ সালে মরহুম রেজা শাহের সিংহাসন ত্যাগের পর রাহনুমা দেশে ফিরে এসে পত্রিকাটির দায়িত্বভার পুনরায় গ্রহণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে তেহরান ও ইরানের সকল প্রভাতী পত্রিকার মধ্যে এটি নেতৃস্থানীয় মান অর্জন করে।
রাহনুমা ঐ সময়ের পর থেকে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এগুলোর মধ্যে ১৯৪২ সালে ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার, ১৯৪৫ সালে প্যারিসের ইরান দূতাবাসে ইরানিয়ান মিনিস্টার এবং ১৯৪৬ সালে সিরিয়া, লেবানন ও ট্রান্সজর্দানের মিনিস্টারের পদমর্যাদার কথা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া তিনি ইরানের মজলিশ বা নিম্নপরিষদে বহু বছর ধরে ডেপুটি এবং সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নবি সা.-এর জীবনী লেখা শুরু হয় তাঁর নির্বাসিত জীবনে। তাঁর প্রণীত জীবনী গ্রন্থের প্রথম খণ্ডটি প্রকাশিত হয় ১৯৩৭ সালে দামেস্কে, দ্বিতীয়টি ১৯৫৩ সালে তেহরানে এবং তৃতীয়টিও ১৯৫৬ সালে তেহরানে। তাঁর এই গ্রন্থটিকে গভীর পাণ্ডিত্যপূর্ণ ও আবেগপ্রবণ লেখার উল্লেখযোগ্য সংযোজন হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে। এ গ্রন্থে এমন কোনো ঘটনার অবতারণা করা হয়নি, যা ঐ সময়ের কোনো স্বীকৃত কাহিনীকারের দ্বারা প্রমাণিত নয়। তাছাড়া এ গ্রন্থটি ইতিহাস বা কোনো রেফারেন্স গ্রন্থের মত ধূলিসম শুষ্ক কিছু নয়।